গত দুই দিন


 ব্যাচেলর জীবন। আর খাবার কষ্ট হবে না তা তো হতে পারে না। চাল শেষ গত দু'দিন হলো। রান্নার কিছু নেই। দোকান থেকে বাকি আনবো তাও সম্ভব না। করণ আগের টাকাটা এখনো পরিশোধ করা হয় নি। 

এটা যে আমরা ইচ্ছা করেছি তা না। রোকনের টাউশনির বেতন দেওয়ার কথা কিন্তু দেই নি। এদিকে আমার বেতন শেষ হয়েগেছে ১০ তারিখেই। বাকি পুরো মাস শুন্য পকেটে। 

গত কাল রাত কি রান্না হবে জানা নেই। আগেরদিন রাতে আরেকজনের কাছে থেকে ধার করে রান্না করেছিলাম। আর কত ধার করা যায়। 

এদিকে শাহাদাত ভাই টাকা পাবে। ছয়শত টাকা নিয়েছিলাম ওয়াইফাই বিল দেওয়ার জন্য। এখন সে প্রতিদিন চাচ্ছে‌। আমার হাতে তো টাকা নেই। এক তারিখের আগে হবেও না। কারণ টিউশনি থেকে পাওয়ার পরেই আমার টাকা হবে। আমি মনে মনে ধরে রেখেছিলাম এক তারিখ দিবো। কিন্তু সে বার বার পিরাপিরি করছিলো। তখন কি অসহ্য লাগছিলো! কার কাছে চাইবো? একজনের কাছে চেয়েছি। শামিমের কাছে। চাওয়ার ভঙ্গিটা আমার এত অসহায় ছিলো আল্লাহ বলে বুঝাতে পারবো না। পরিশেষে সে বললো ভাই আসুক তারপর দেই। এটা শুনে আমি চলে এলাম।এবং অপেক্ষায় রইলাম। 

রাতে শাহিন ভাই এলো। হয়তো শামিম টাকা চেয়েছে আমার। কিন্তু কি যেন একটা প্রতি উত্তর শুনতে পেলাম।  "আরে এগুলো মিথ্যা" 

পরে আর শামিম আমার কাছে আসেনি। টাকা নিয়ে অর কথাও বলে নি। 

নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছিল। 

রান্না বান্না করা হচ্ছে চাল নেই। পকেটে টাকা নেই। পরিশেষে বাধ্য দোলা ভাইয়ের কাছ থেকে এক হাজার টাকা আনলাম‌। সব টাকা খরচ হয়ে গেলো। খুজাখুজি করে সব মিলিয়ে পেলাম ৬০ টাকা। এটা দিয়ে আজকে রাতে কিভাবে কি করা যায়। 

বাটার নান আনলাম দুইটা আর বাসায় একটা ডিম ছিলো।  একটা আর দুইজন দুইটা বাটার নান। এই ছিলো রাতের খাবার। কিন্তু সকালে দুপুরে কি হবে জানা নেই। 

এই এক টুকরো রুটিই আজকের সারা দিনের খাবার। আলহামদুলিল্লাহ! ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ!

Popular posts from this blog

জীবনের ফার্স্ট টিউশনি (১০/১২/২০২৩)

রাফানের আম্মু