কীভাবে বাঁচতে হয়?
ঈদের পর দ্বিতীয় শুক্রবার। ঈদ হয়েছে বৃহস্পতিবার। দীর্ঘ ছুটির পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। আসবো বাসে কিন্তু কোন দিক দিয়ে? ত্রিশাল দিয়ে নাকি হোসেনপুর দিয়ে? পরে সিদ্ধান্ত হলো ত্রিশাল দিয়ে। আপা এবং আমি সবাই একসাথে বাসায় আসবো। সাথে আছে আরো অনেক আসবাবপত্র। খুব ভোরে রওনা হলাম নানি বাড়ি গিয়ে সেখান থেকে নাকি ডাইরেক বাস পাওয়া যায়। তাই প্রথম নানি বাড়ি গেলাম। খাওয়া দাওয়া করে বিকালে ৫:৩৭ এর দিকে বাসে উঠলাম।
বাসটা নাকি ডাইরেক বাস, তার মানে লোকাল না আরকি। কিন্তু এটা কেমন ডাইরেক বাস লোক দাঁড়িয়ে ও যায়। এমনকি মহিলাদেরকেও দাড়িয়ে যেতে হচ্ছে।
এক কাপল উঠেছে। মনে হয় কোন গার্মেন্টসে কাজ করে বা অন্য কিছু করে। তবে মহিলাটা দাঁড়িয়েছে আমার সাইটে। যাবে স্কয়ার মাস্টার বাড়ি। কিন্তু এই গরমে একজন মহিলা দাঁড়িয়ে যাওয়াটা অনেক কঠিন। কিন্তু আমি বসে ছিলাম। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিল।
তখন চিন্তা হলো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম মহিলাদেরকে কতটা সম্মান দিয়েছেন। আর আমি বসে থাকবো সে দাঁড়িয়ে যাবে এটা তো হতে পারে না। এক পর্যায়ে চিন্তা করলাম আমি উঠবো কি উঠবো না।
এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। তারপর উঠে তাকে জায়গা দিলাম।
তখন দিলের মধ্যে এক ধরনের প্রসান্তি অনুভব হলো। অপরাধবোধটুকু কেটে গেল। পাশে তার হাজবেন্ড দাঁড়ান ছিলো। সে আমাকে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। তারপর বললো ভাই! আমি কোনদিন কোন মহিলাকে দাড়িয়ে রেখে আমি বসে আসিনি। মনে হয় আল্লাহ এর প্রতিদান দিয়ে দিয়েছেন।
আরে না ভাই। বললাম আমি।
এখানে এই ছেট্ট একটা জিনিস আমাকে যে প্রসান্তি দিয়েছে। তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
নিজেকে এক অন্য রকম মানুষ মনে হচ্ছিল।